Pages

Tuesday, October 29, 2024

শীতের ফুলের চারা থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত - শীতের ফুলের যত্নে আস্থা রাখুন, ফলাফল পাবেন দারুণ

 

শীতের ফুলের বাগান তৈরি করতে চান? আস্থা প্রোডাক্টগুলো আপনাকে সাহায্য করবে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর চারা তৈরি করতে এবং ফুল ফোটাতে। আসুন জেনে নিই কখন কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন এবং কেন:

কাটিং থেকে চারা তৈরি এবং অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা

  • আস্থা রুট মাস্টার: কাটিংগুলোকে দ্রুত এবং শক্তিশালী মূল তৈরি করতে সাহায্য করে। কাটিংয়ের নিচের অংশকে রুট মাস্টারে ডুবিয়ে মাটিতে লাগান।
  • আস্থা টিভি এবং আস্থা পিএফ: মাটিতে মিশিয়ে বা পাতার উপর স্প্রে করে ব্যবহার করলে মাটি ও গাছকে রোগাক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট: মাটির গুনগত মান বাড়ায় এবং গাছকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
  • আস্থা নীম সুপার: কীটনাশক হিসেবে কাজ করে এবং গাছকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

ছোট চারা গাছের দ্রুত এবং সঠিক বৃদ্ধি

গাছে প্রচুর শাখা প্রশাখা এবং ফুল আনা

কীটনাশক হিসেবে

কখন কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন:

  • মাটি তৈরির সময়: আস্থা ভার্মিকম্পোস্ট, আস্থা টিভি এবং আস্থা পিএফ
  • কাটিং লাগানোর সময়: আস্থা রুট মাস্টার
  • চারা গাছের বৃদ্ধির সময়: আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার, অর্গানিক নাইট্রোজেন
  • ফুল আনার সময়: আস্থা গ্রোগোল্ড
  • পোকামাকড়ের আক্রমণের সময়: আস্থা কিলার ১৫ এবং আস্থা কিলার ১০০০০

কেন এই প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করবেন:

  • স্বাস্থ্যকর চারা তৈরি: মাটির গুনগত মান বাড়ায়, রোগবালাই থেকে রক্ষা করে এবং গাছকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
  • দ্রুত বৃদ্ধি: চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যকর বিকাশ ঘটায়।
  • প্রচুর ফুল: গাছে প্রচুর শাখা প্রশাখা এবং ফুল আনতে সাহায্য করে।
  • পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধ: পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করে।

আপনিও আস্থা প্রোডাক্ট ব্যবহার করে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর শীতের ফুলের বাগান তৈরি করতে পারেন।

এই শীতে ফসল হোক রোগমুক্ত! শীতের সবজি চাষে উন্নত ফলন পেতে বেছে নিন সঠিক জৈবিক সার!

 এই শীতে আপনার ফসলকে রোগমুক্ত এবং সুস্থ রাখতে চান? সঠিক জৈবিক সার দিয়ে দিন আপনার সবজি চাষে উন্নতির গ্যারান্টি!

শীতের সবজি থেকে ভালো ফলন পেতে মাটিকে সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরি। আসুন জেনে নিই কিছু সেরা জৈবিক সার, যা আপনার ফসলকে রোগমুক্ত রাখবে এবং ফলনকে আরও উন্নত করবে।

1. ফসফেট সমৃদ্ধ অর্গানিক ফার্টিলাইজার (PROM)

উদাহরণ: Astha PROM (ফসফেট সমৃদ্ধ অর্গানিক ফার্টিলাইজার)

কীভাবে সহায়তা করে:
এটি মাটিতে জমে থাকা ফসফরাসকে গাছের শোষণের উপযোগী করে তোলে, যা শিকড়ের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং দ্রুত ফুল ফোটায়।
সেরা ফসল: গাজর, মূলা, পালং শাক, ব্রকোলি, ফুলকপি।

2. পটাশিয়াম-মোবিলাইজিং বায়োফার্টিলাইজার (KMB)

উদাহরণ: Astha KMB
কীভাবে সহায়তা করে:
এটি পটাশিয়ামকে সহজলভ্য করে, যা ফসলকে ঠান্ডা-সহিষ্ণু করে তোলে এবং সবজির স্বাদ, রং ও


আকার উন্নত করে।
সেরা ফসল: টমেটো, বিট, পালং শাক, ফুলকপি।

3. নাইট্রোজেন-ফিক্সিং বায়োফার্টিলাইজার

উদাহরণ:Rhizobium (ডাল জাতীয় ফসলের জন্য), Azotobacter/Azospirillum (অন্যান্য ফসলের জন্য)
কীভাবে সহায়তা করে:
এটি বাতাস থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে, যা ফসলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে এবং সবজিকে স্বাস্থ্যবান করে তোলে।
সেরা ফসল: মটরশুটি, বিনস, শাকসবজি, ধনেপাতা।

4.  বায়ো ফাঙ্গিসাইড /Bio Fungicide

উদাহরণ: ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি/সিউডোমোনাস ফুলুরোসেন্স 

কীভাবে সহায়তা করে:
এটি গাছের শিকড়ে বাসা বাঁধে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মাটির পুষ্টিগুণও বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ফসলের ফলন আরও ভালো হয়।
সেরা ফসল: আলু, বাঁধাকপি, গাজর, এবং ব্রকোলি সহ সকল ফসলের জন্য অত্যান্ত কার্যকর।

এই শীতে সঠিক জৈব সার বেছে নিন, ফসলকে সুস্থ রাখুন এবং পোকামাকড় ও রোগ থেকে সুরক্ষিত করুন। জৈব সার ব্যবহারে মাটির গুণমান বজায় থাকবে এবং আপনি পাবেন উন্নত স্বাদ ও পরিমাণের ফলন।

সুস্থ মাটি, ভালো ফসল!

সঠিক পদ্ধতিতে বায়োফার্টিলাইজার প্রয়োগ করে এই শীতে আপনার সবজি চাষে উন্নতির গ্যারান্টি দিন!

Wednesday, August 7, 2024

ডাল চাষে আস্থা রাইজো (রাইজোবিয়াম) এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার

 


















আস্থা রাইজো বা রাইজোবিয়াম হলো এক ধরনের জীবাণু সার যা ডাল চাষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 

ভূমিকা পালন করে। এই জীবাণুগুলি ডাল গাছের মূলে জড়িয়ে বসবাস করে এবং বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে আমোনিয়া যৌগে রূপান্তরিত করে, যা ডাল গাছ সহজে শোষণ করতে পারে।

কেন রাইজোবিয়াম গুরুত্বপূর্ণ?

আস্থা রাইজো বা রাইজোবিয়াম হলো একটি পরিবেশবান্ধব এবং কার্যকর জীবাণু সার যা ডাল চাষে ফলন

বাড়াতে এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • নাইট্রোজেন স্থিরীকরণ: রাইজোবিয়াম বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে গাছের ব্যবহার উপযোগী করে তোলে, যা গাছের বৃদ্ধি এবং ফলন বাড়াতে সাহায্য করে।
  • সারের ব্যবহার কমায়: রাইজোবিয়াম ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে হয়, যা পরিবেশের জন্য উপকারী।
  • মাটির উর্বরতা বাড়ায়: রাইজোবিয়াম মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ায় এবং মাটির গঠন উন্নত করে।
  • গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: রাইজোবিয়াম গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।


কোন কোন চাষে রাইজোবিয়াম ব্যবহার করা যেতে পারে?


রাইজোবিয়াম মূলত দলীয় ফসল যেমন:

  • মটর: সব ধরনের মটর (কালো মটর, সবুজ মটর ইত্যাদি)
  • মসুর: সব ধরনের মসুর (লাল মসুর, সবুজ মসুর ইত্যাদি)
  • চালি: সব ধরনের চালি
  • কুইনোয়া: এই দানাশস্যটিতেও রাইজোবিয়াম ব্যবহার করা হয়
  • আলু: কিছু জাতের আলুতেও রাইজোবিয়াম ব্যবহার করা হয়

মনে রাখবেন: বিভিন্ন ফসলের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইজোবিয়াম জাত ব্যবহার করা হয়। তাই ফসলের ধরন অনুযায়ী সঠিক জাতের রাইজোবিয়াম ব্যবহার করা উচিত।

রাইজোবিয়াম ব্যবহারের উপায়:

  • বীজের সাথে মিশিয়ে: বীজ বোনার আগে বীজের সাথে রাইজোবিয়াম মিশিয়ে বোনা হয়।
  • মাটিতে মিশিয়ে: মাটিতে রাইজোবিয়াম মিশিয়ে তারপর বীজ বোনা হয়।

সতর্কতা: রাইজোবিয়ামকে সরাসরি সূর্যের আলো এবং উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আনবেন না। এটি জীবন্ত জীবাণু বলে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিবর্তন এর কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে।

Saturday, July 13, 2024

গাছের খাদ্য - সুস্থ বৃদ্ধির রহস্য

 সবুজ সুপারস্টারদের খাবারের রহস্য -  কী খায় গাছপালা?

আমাদের চারপাশে সবুজের সমারোহ। গাছপালা আমাদের জীবনে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, এই সবুজের পেছনে কত রহস্য লুকিয়ে আছে? গাছপালাও কি আমাদের মতো খাবার খায়?

হ্যাঁ, গাছপালাও বেঁচে থাকার জন্য খাবারের প্রয়োজন। তবে আমাদের খাবারের সাথে তাদের খাবারের অনেক পার্থক্য আছে।

গাছের খাদ্য কী?

গাছের খাদ্য হলো মূলত কিছু মৌলিক উপাদান যা মাটি থেকে শোষিত হয়। এই উপাদানগুলোকে আমরা পুষ্টি উপাদান বলি। প্রধান পুষ্টি উপাদানগুলো হলো:

  • ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস: নাইট্রোজেন (N), ফসফরাস (P), পটাশিয়াম (K), ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), সালফার (S)
  • মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস: লোহা (Fe), ম্যাঙ্গানিজ (Mn), বোরন (B), জিঙ্ক (Zn), মলিবডেনাম (Mo), কপার (Cu)

এই উপাদানগুলো কিভাবে কাজ করে?

  • নাইট্রোজেন: নতুন কোষ তৈরি এবং পাতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • ফসফরাস: শিকড়ের বৃদ্ধি, ফুল ও বীজের উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • পটাশিয়াম: জল শোষণে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • ক্যালসিয়াম: কোষের দেয়াল শক্তিশালী করে, শিকড়ের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • ম্যাগনেসিয়াম: ক্লোরোফিল তৈরিতে সাহায্য করে।
  • সালফার: কোষের বৃদ্ধি ও প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে।
  • লোহা: ক্লোরোফিল তৈরিতে সাহায্য করে।
  • ম্যাঙ্গানিজ: শ্বাসক্রিয়া ও শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • বোরন: ফুল ও বীজের উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • জিঙ্ক: উৎসেচক কার্যক্রমে সাহায্য করে।
  • মলিবডেনাম: নাইট্রোজেন স্থায়ীকরণে সাহায্য করে।
  • কপার: শ্বাসক্রিয়া ও শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।

কতটা প্রয়োজন?

প্রতিটি পুষ্টি উপাদানের নির্দিষ্ট পরিমাণ গাছের জন্য প্রয়োজন। মাটির ধরন, গাছের প্রজাতি, এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে এই পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে।

উপাদানের অভাবের লক্ষণ:

  • পুষ্টি উপাদানের অভাব হলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়।
  • পাতা হলুদ হয়ে যেতে পারে।
  • পাতা ঝরে যেতে পারে।
  • ফুল ও ফলের উৎপাদন কমে যেতে পারে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

সঠিক সার প্রয়োগ :

আপনি যদি মনে করেন আপনার গাছপালায় পুষ্টির অভাব রয়েছে, তাহলে মাটি পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে পারেন। মাটি পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে আপনি সঠিক সার প্রয়োগ করতে পারবেন।

কীভাবে সার ব্যবহার করবেন?

  • বিভিন্ন ধরনের সার পাওয়া যায়। প্রতিটি সারের মধ্যে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের মাত্রা আলাদা হয়। আপনার গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের উপর নির্ভর করে সার নির্বাচন করুন।
  • সারের প্যাকেটের নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ুন এবং সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করুন। বেশি সার মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
  • জৈবিক সার, যেমন ভার্মিকম্পোস্ট বা কম্পোস্ট, ব্যবহারের চেষ্টা করুন। জৈবিক সার মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং দীর্ঘমেয়াদী উপকারিতা দেয়।

গাছপালাও আমাদের মতো খাবার খায়। তবে, তাদের খাবার মাটি থেকে আসে। বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান গাছের সুস্থ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সঠিক পরিচর্চা এবং সার প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের গাছপালাকে সুস্থ ও সবুজ রাখতে পারি।

Friday, July 12, 2024

কৃষি ক্ষেত্রে নাইট্রোজেনের ভূমিকা

 নাইট্রোজেন হলো উদ্ভিদের তিনটি প্রধান পুষ্টি উপাদানের মধ্যে একটি, যা কার্বন এবং অক্সিজেনের পরেই আসে। এটি উদ্ভিদের প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড এবং ক্লোরোফিল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষি ক্ষেত্রে, নাইট্রোজেনের পর্যাপ্ত সরবরাহ ফসলের উৎপাদনশীলতা এবং গুণমান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

নাইট্রোজেন কীভাবে কাজ করে?

  • প্রোটিন তৈরিতে সহায়তা করে: নাইট্রোজেন প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা উদ্ভিদের কোষের গঠন এবং কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। এটি এনজাইম, অ্যান্টিবডি এবং
    অন্যান্য প্রোটিন তৈরিতেও ভূমিকা পালন করে যা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে।
  • নিউক্লিক অ্যাসিড তৈরিতে সহায়তা করে: নাইট্রোজেন ডিএনএ এবং আরএনএ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা উদ্ভিদের জিনগত তথ্য ধারণ করে। এই নিউক্লিক অ্যাসিডগুলি উদ্ভিদের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং প্রজননের জন্য অপরিহার্য।
  • ক্লোরোফিল তৈরিতে সহায়তা করে: ক্লোরোফিল হল একটি সবুজ রঙ্গক যা উদ্ভিদকে সূর্যের আলো থেকে শক্তি শোষণ করতে সাহায্য করে। নাইট্রোজেন ক্লোরোফিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, এবং এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে উদ্ভিদ সঠিকভাবে সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে।

কৃষিক্ষেত্রে নাইট্রোজেনের গুরুত্ব

  • ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে: নাইট্রোজেন উদ্ভিদের পাতা, ডালপালা এবং শিকড়ের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। এটি ফুল এবং ফলের উৎপাদনও বৃদ্ধি করে। পর্যাপ্ত নাইট্রোজেন সরবরাহ থাকলে ফসলের উৎপাদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • ফসলের গুণমান উন্নত করে: নাইট্রোজেন প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ফসলের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ফসলকে আরও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর করে তোলে।
  • মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে: নাইট্রোজেন মাটির জৈব পদার্থের মাত্রা বৃদ্ধি করে মাটির উর্বরতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি মাটির জল ধরে রাখার ক্ষমতা এবং পুষ্টি উপাদান ধরে রাখার ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

কৃষিক্ষেত্রে নাইট্রোজেন ব্যবহারের পদ্ধতি

  • জৈব সার:যেমন জৈব সার (জীবাণু সার), সবুজ সার, কম্পোস্ট এবং ভার্মিকম্পোস্ট, মাটিতে নাইট্রোজেনের একটি ধীরে ধীরে মুক্তি দেওয়ার উৎস সরবরাহ করে। এগুলি মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী নাইট্রোজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

  • রাসায়নিক সার: ইউরিয়া এবং অ্যামোনিয়াম সালফেট কৃষিক্ষেত্রে নাইট্রোজেনের একটি দ্রুত উৎস হিসাবে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার। যাইহোক, রাসায়নিক সারগুলির অতিরিক্ত ব্যবহার মাটির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এবং পরিবেশ দূষণ ঘটাতে পারে। সুতরাং, মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে নাইট্রোজেনের সঠিক মাত্রা নির্ধারণ করে রাসায়নিক সারের ব্যবহার সীমিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

  • ফসলের আবর্তন: ফসলের আবর্তন হলো একই জমিতে চলাকালীন বিভিন্ন ধরণের ফসল লাগানোর পদ্ধতি। কিছু ফসল, যেমন শিম, বাতাস থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে মাটিতে সঞ্চয় করে রাখতে পারে। ফসলের আবর্তনের মাধ্যমে এই "নাইট্রোজেন-ফিক্সিং" ফসলগুলি অন্তর্ভুক্ত করা মাটিতে নাইট্রোজেনের প্রাকৃতিক সরবরাহ বজায় রাখতে সাহায্য করে।

নাইট্রোজেন কৃষিক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। এটি ফসলের উৎপাদনশীলতা এবং গুণমান উন্নত করতে এবং মাটির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কৃষকরা জৈব সার, রাসায়নিক সার এবং ফসলের আবর্তনের মতো বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে নাইট্রোজেনের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারেন। এই পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা ফসলের উৎপাদন বাড়াতে এবং পরিবেশকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করবে।


অ্যাজোটোব্যাক্টর: প্রাকৃতিক সার এবং ফসলের উর্বরতা বৃদ্ধির চাবি কাঠি


আজকের কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ব্যাপক হলেও, এর ক্ষতিকারক দিকগুলিও উপেক্ষা করা যায় না। মাটির স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে এই সার। সেক্ষেত্রে, পরিবেশবান্ধব কৃষিক্ষেত্রের চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদা মেটাতে একটি দারুণ উপায় হল আজোটোবাক্টর ব্যবহার। এটি মাটির উর্বরতা বাড়িয়ে ফসলের ফলন আরও ভালো করতে সাহায্য করে।

অ্যাজোটোব্যাক্টর কী ?

অ্যাজোটোব্যাক্টর এক ধরণের উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা বাতাসের নাইট্রোজেন (বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন) কে মাটিতে স্থাপন করে। আমরা জানি, নাইট্রোজেন গাছের জন্য অত্যন্ত জরুরি পুষ্টি উপাদান। কিন্তু গাছ সরাসরি বাতাসের নাইট্রোজেন নিতে পারে না। অ্যাজোটোব্যাক্টর এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা বাতাসের নাইট্রোজেনকে গাছের শোষণযোগ্য রূপে (যেমন, অ্যামোনিয়া) রূপান্তরিত করে, ফলে গাছের বৃদ্ধি আরো ভালো হয়।

কীভাবে কাজ করে অ্যাজোটোব্যাক্টর ?

অ্যাজোটোব্যাক্টর মাটিতে বাস করে। এরা বায়ু থেকে নাইট্রোজেন স্থাপনের জন্য একটি বিশেষ এনজাইম, নাইট্রোজেনেস,  ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়ায়, বাতাসের নাইট্রোজেন দুটি নাইট্রোজেন পরমাণুর (N₂)  জোড় ভেঙে যায় এবং পরে একক নাইট্রোজেন পরমাণু (N) গুলিকে অ্যামোনিয়াতে (NH₃) রূপান্তরিত করা হয়। এই অ্যামোনিয়া গাছের শেকড়ের মাধ্যমে শোষিত হয়ে গাছের পাতা, ফুল ও ফলে ব্যবহৃত হয়।

কোন ফসলে অ্যাজোটোব্যাক্টর কার্যকর ?

  • ধান
  • গম
  • ভুট্টা
  • আখ
  • সরষে
  • সবজি (টম্যাটো, capsicum ইত্যাদি)
  • তুলা

অ্যাজোটোব্যাক্টর ব্যবহারের পদ্ধতি :

অ্যাজোটোব্যাক্টর (biofertilizer) বাণিজ্যিকভাবে পাউডার ও লিকুইড আকারে পাওয়া যায়। এটি ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ:

বপনের ঠিক আগে বীজকে ভিজানোর সময় জলের সঙ্গে নির্দেশিত পরিমাণে অ্যাজোটোব্যাক্টর মিশিয়ে নিন।

অথবা, জমি প্রস্তুত করার সময় জমিতে সরাসরি অ্যাজোটোব্যাক্টর মেশানো যেতে পারে।

**  কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় **

কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করতে, ভালো মানের অ্যাজোটোব্যাক্টর কিনুন সে ক্ষেত্রে Astha AZO ব্যবহার করতে পারেন।

মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যাজোটোব্যাক্টর কখনোই ব্যবহার করবেন না।

Wednesday, December 13, 2023

জীবাণুসার প্রয়োগে 2৫ শতাংশ ফলন বাড়ানো সম্ভব, বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা

 কৃষি বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী জীবাণুসার ব্যবহারে ফলন ১৫ - ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব । তাঁদের বক্তব্য অনুসারে, সঠিক নিয়মে জীবাণুসার ব্যবহার করলে মাটিতে বসবাসকারি উপকারি জীবাণুর সংখ্যা ও তাদের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জমিতে আরও বেশি পরিমানে নাইট্রোজেন ও কার্বন যুক্ত হয়। তাই জীবাণুসার ব্যবহারের করলে অব্যবহারীকৃত জৈব নাইট্রোজেন, মাটিতে অদ্রবীভূত ফসফেট ও পটাশকে গাছের ব্যবহারের উপযুক্ত করে তোলা যায়। যার ফলে অনেক কম খরচে গাছের জন্য প্রয়োজনীয় সুষম খাবারের যোগান দেওয়া সম্ভব হয়। এতে যেমন একদিকে চাষের খরচ কমে, অপরদিকে তেমন রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেক কমানো যায়।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবাণুসার কেনার সময় অবশ্যই কয়েকটি বিষয় কৃষককে খেয়াল রাখতে হবে, যেমন - কোন ফসলের জন্য কোনটি প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে। ওই জীবাণুসারটি তৈরির তারিখ, তার কার্যকারিতা কতদিন থাকবে এবং সেটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন যে যদি কোনো কৃষক রাইজোবিয়াম জীবাণুসার ব্যবহার করেন এবং বীজ শোধন করার জন্য  যদি থাইরাম বা পারদঘটিত কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করেন, তা হলে রাইজোবিয়াম জীবাণু মারা যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে রাইজোবিয়াম সমন্বিত জীবাণু সারের প্রয়োগের মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে।

তবে যদি কার্বেন্ডাজিম বা ম্যানকোজেব ব্যবহার করা হয় সে ক্ষেত্রে রাইজোবিয়ামের উপর কোনও বিরূপ প্রভাব পড়ে না। আবার দানা জাতীয় কীটনাশকের মধ্যে ফোরেট ১০জি ব্যবহারের ফলে রাইজোবিয়ামের ক্ষতি করলেও কার্বোফুরান জি ব্যবহার করলে রাইজোবিয়ামের কোনও ক্ষতি হয় না।

অ্যাজোটোব্যাক্টর জীবাণুসার ব্যবহারের ফলে গাছে নাইট্রোজেন এর  সরবরাহ অনেক বৃদ্ধি পায়। অ্যাজোটোব্যাক্টর বিভিন্ন উপকারি হরমোন উৎসেচক ক্ষরণের মাধ্যমে ফসলের সঠিক পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও অ্যাজোটোব্যাক্টর বিভিন্ন ছত্রাকনাশক কিংবা ব্যাকটেরিয়া নাশক ক্ষরণ করে যা গাছকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। যদি সঠিক মাত্রায় অ্যাজোটোব্যাক্টর ব্যবহার করা হয় তাহলে  গমে ১৫ শতাংশ, ভুট্টায় ১৯ শতাংশ, টম্যাটোতে ১৫ শতাংশ, লঙ্কায় শতাংশ, ধানে ১৪ শতাংশ ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে জানান কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

যদিও স্যাঁতসেঁতে জমিতে অ্যাজোটোব্যাক্টরের কার্যকারিতা বেশি, কিন্তু ,বদ্ধ জলাশয়ের ক্ষেত্রে এর   কার্যকারিতা অনেক কম। মাটিতে যদি রাসায়নিক নাইট্রোজেনের উপস্থিতি খুব বেশি  থাকে তাহলে  অ্যাজোটোব্যাক্টরের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। কার্বেন্ডাজিম, ম্যানকোজেব, বোনমিল, সালফার ব্যাবহার করলে অ্যাজোটোব্যাক্টরের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে যদি কীটনাশকের মধ্যে মিথাইল, প্যারাথিয়ন, ম্যালাথিয়ন, ফসফামিডন প্রভৃতি প্রয়োগ করা হয় তাহলে অ্যাজোটোব্যাক্টরের কার্যকারিতা নষ্ট হয়। ওপর দিকে কার্বোফুরান, মনোক্রোটোফস ব্যবহারে অ্যাজোটোব্যাক্টর উদ্দীপিত হয় আবার ফোরেট, কার্বারিল প্রয়োগ করলে প্রাথমিকভাবে অ্যাজোটোব্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাজোটোব্যাক্টর ওই রাসায়নিক নিস্ক্রিয় করে দেয়।

কোনো জমিতে যদি অ্যাজোস্পাইরিলাম জীবাণুসার সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা হয় তাহলে জমিতে হেক্টর প্রতি  প্রায় ২৫ কেজি নাইট্রোজেন সঞ্চিত হয়। এই জীবাণুসার উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে, তার ফলে ফসলের বৃদ্ধি ভালো হয়। অ্যাজোস্পাইরিলাম জীবাণুসার প্রয়োগের ফলে গমে শতাংশ, ধানে ১৭ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মাটির পিএইচ -. এর মধ্যে থাকলে ওই জীবাণুসার খুব ভালো কাজ করে। তবে কোনো জমিতে বেশি সময় ধরে জল জমে থাকলে সেক্ষেত্রে অ্যাজোস্পাইরিলামের কার্যকারিতা কমে যায়। সালফার, ম্যানকোজেব, ক্যাপটান, কার্বেন্ডাজিম, বেনোমিল প্রভৃতি যদি সঠিকমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়, তাহলে এই জীবাণুসারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। অপর দিকে কার্বোক্সিন, থাইরাম প্রয়োগ করলে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়।

পাশাপাশি কুইনলফস, ফসফামিডন, ফেনাথিয়ন প্রভৃতি কীটনাশক অ্যাজোস্পাইরিলামের ক্ষতি করে। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, অ্যাজোটোব্যাক্টর মূলত বেলে বা বেলে-দোঁয়াশ মাটি, যেখানে জলধারণ ক্ষমতা কম, সেখানে ভালো কাজ করে। আবার যেখানে কাদামাটি, জলধারণ ক্ষমতা বেশি কিন্তু জল নিস্কাশনের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে, এরকম জমিতে অ্যাজোস্পাইরিলাম খুব ভালো কাজ করে। আবার  যেখানে মাটির অবস্থা সঠিক বোঝা যায়না আবার যে সব জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে অ্যাজোটোব্যাক্টর অ্যাজোস্পাইরিলাম ৫০: ৫০ পরিমান প্রয়োগ করা যেতে পারে।

বীজ শোধনের জন্য প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ২০ গ্রাম জীবাণুসার ব্যবহার করা যায়। ২০০ গ্রাম জীবাণুসার ৪০০ মিলি জলে গুনতে হবে। তার পর ১০ কেজি বীজে তা মাখাতে হবে। এর পর ওই বীজ ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। চারা শোধনের জন্য কেজি জীবাণুসার ১০ লিটার জলে গুলতে হবে। তার পর ওই দ্রবণে চারার শিকড় আধঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে। একর প্রতি কেজি অ্যাজোটোব্যাক্টর বা অ্যাজোস্পাইরিলাম জীবাণুসার নিয়ে ১০০ কেজি ভার্মিকম্পোস্ট বা অন্য কোনো কম্পোস্টের সঙ্গে মিশিয়ে সেচ দেওয়ার আগে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

চারাগাছের ক্ষেত্রে, গাছপ্রতি ২৫ গ্রাম জীবাণুসার ৫০০গ্রাম ভার্মিকম্পোস্ট বা অন্য কোনো ভালো মানের কম্পোস্টের সঙ্গে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দেওয়া যেতে পারে। বর্তমান সময়ে চাষের জমিতে জৈব বস্তুর পরিমাণ কমে যাচ্ছে, এর ফলে জমিতে উপকারি জীবাণুর সংখ্যাও কমছে। আর এই জীবাণুই হল ভালো কৃষি জমির মূল ভিত্তি, এই কারণেই কৃষিজমিতে জীবাণুসার প্রয়োগ জরুরি।  তবে জীবাণুসার প্রয়োগের অন্তত দিন আগে বা দিন পরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা উচিত।