পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের অর্থনীতিতে চায়ের অবদান অনস্বীকার্য। চা গাছ চির সবুজ এবং পাতাই ফসল হিসাবে গন্য হয় বলে এ ফসলেরউ ৎকর্ষতা বজায় রাখার জন্য সার প্রয়োগের সাথে সাথে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট অতীব প্রয়োজনীয়। তাই লীলা এগ্রোটেক নিয়ে এসেছে আস্থা টি স্পেশাল নামে পরিচিত এবং অতি প্রয়োজনীয় একটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। যাতে আছে ম্যাঙ্গানিজ, বোরন, মলিবডেনাম, ম্যাগনেসিয়াম, তামা সহ অতিপ্রয়োজনীয় হরমোন যা উন্নত চা চাষের অপরিহার্য উপাদান।
আস্থা টি স্পেশাল-এ ব্যাবহারিত উপাদান গুলি কেন অপরিহার্য ? কারণ এতে আছে ম্যাঙ্গানিজ, বোরন, মলিবডেনাম, ম্যাগনেসিয়াম, তামা এবং অতিপ্রয়োজনীয় হরমোন। এগুলি কি ভাবে কাজ করে-
ম্যাঙ্গানিজ: সালোকসংশ্লেষ, শ্বসন, নাইট্রোজেন বিপাকে উৎসেচকের কাজে ম্যাঙ্গানিজের
প্রয়োজন। নতুন পাতায় ম্যাঙ্গানিজের অভাব ঘটলে পাতার রঙ হাল্কা সবুজ হয়ে যায় এবং অসংখ্য
সবুজ শিরা দেখা দেয় (যেমন লোহার অভাবে হয়)। সমস্যা গভীর হলে সবুজ অঙ্গ সাদা হয়ে যায়,
পাতা ঝরে যায়। গাছের শিরার পাশে বাদামি, কালো বা ধূসর ছোপ ছোপ হয়ে যায়।
বোরন: কোষপ্রাচীর গঠন, ঝিল্লিকে ধরে রাখা, ক্যালসিয়াম গ্রহণ এবং অনেক ক্ষেত্রে
শর্করার স্থানচ্যূতি ঘটানোয় বোরন সাহায্য করে। উদ্ভিদের অন্তত ১৬টি কাজে বোরন ভূমিকা
পালন করে। এর মধ্যে রয়েছে ফুল ফোটা, পরাগরেণু বেরোনো, ফল ধরা, কোষ বিভাজন, জল ব্যবহার
ও হরমোনের চলাচল। উদ্ভিদের গোটা জীবন জুড়েই বোরন প্রয়োজন। এর অভাবে কুঁড়ি ঝরে যায়
এবং গাছে ছোপ ছোপ হয়ে যায়, পাতা পুরু হয় এবং কুঁকড়ে ভঙ্গুর হয়ে যায়। ফল, কন্দ ও মূল
বিবর্ণ হয়ে যায়, ফেটে যায় এবং বাদামি ছোপ ধরে।
মলিবডেনাম: যে সব উৎসেচক নাইট্রেটকে অ্যামোনিয়ায় রূপান্তরিত করে, সেগুলিতে মলিবডেনাম
থাকে। এর অভাবে প্রোটিনসংশ্লেষ বন্ধ হয়ে যায় এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধি থেমে যায়। শিকড়ে
নাইট্রোজেন জোগান দেয় যে ব্যাকটেরিয়া, তারও মলিবডেনাম প্রয়োজন হয়। এর অভাবে বীজের গঠন
সম্পূর্ণ হয় না এবং উদ্ভিদে নাইট্রোজেনের অভাব ঘটে। এর অভাবে পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং
ধারের দিকগুলো ভাঁজ হয়ে যায়।
ম্যাগনেসিয়াম: এটি ক্লোরোফিল অণুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং কার্বোহাইড্রেট,
শর্করা ও চর্বি উৎপাদনে এটি উদ্ভিদের উৎসেচকগুলিকে সহায়তা করে। ফল ও বাদাম ফলনে এটি
ব্যবহৃত হয়, বীজের অঙ্কুরোদ্গমের জন্যও এটি জরুরি। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে উদ্ভিদ পাণ্ডু
বর্ণ হয়ে যায়, পাতার রং হলুদ হয়ে যায়, পাতা ঝুঁকে পড়ে। গাছে জল দিলে ম্যাগনেসিয়াম
বেরিয়ে যায়। গাছে সার দেওয়ার সময় তাই অবশ্যই ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োগ করা উচিত। ঘাটতি মেটানোর
জন্য ফোলিয়ার স্প্রে হিসাবে ম্যাগনেসিয়াম দেওয়া দরকার।
তামা: উদ্ভিদের শিকড়ে তামা জমে থাকে এবং নাইট্রোজেন বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা
করে। এটি বহু উৎসেচকের মধ্যে থাকে এবং যে সব উৎসেচক শর্করা ও প্রোটিন ব্যবহার করে,
তাতেও অংশ নিতে পারে। এর অভাবে পাতার অগ্রভাগের পেছনের অংশ মরে যায় এবং পাতায় বাদামি
ছোপ হয়ে যায়। জৈব উপাদানে তামা দৃঢ়বদ্ধ থাকে কিন্তু মাটি জৈব চরিত্রের হলে তামার অভাব
হতে পারে। এটা মাটি থেকে হারিয়ে যায় না ঠিকই কিন্তু অনেক সময়ই পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত
তামায় বিষক্রিয়া ঘটে।
হরমোনের ব্যবহার: চা গাছের ডাল ছাঁটার পর ওই সমস্ত ক্ষতস্থান মেরামত করা, অপরিণত অঙ্গের (যেমন: পাতা, মুকুল, ফুল, ফল ইত্যাদি ) অকালমোচন রোধ করা হয়,
দ্রুত অঙ্কুরোদ্গম ঘটানো, চা পাতার আয়তন বৃদ্ধি,
পুষ্প-মুকুলের পরিস্ফুটন ত্বরান্বিত করা ইত্যাদি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন