Pages

Friday, December 13, 2024

রসুনের চাষ এবং পরিচর্যা

 রসুন চাষ একটি জনপ্রিয় কৃষি প্রক্রিয়া, যা সঠিক পরিচর্যা এবং সার ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। এখানে রসুনের কান্ড বড় করার জন্য সঠিক পদ্ধতি এবং Astha ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হলো।

রসুনের চাষের জন্য পদ্ধতি:

  1. অর্গানিক পদ্ধতি:

    • Astha Vermicompost: রোপণের পর প্রথম ৭ দিনে প্রতি গাছের গোড়ায় ৫০-১০০ গ্রাম

      ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করুন। এটি মাটি উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং গাছের বৃদ্ধি উৎসাহিত করে। প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর পুনরায় ৫০-১০০ গ্রাম ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করুন।
    • Astha Neem Super: সপ্তাহে ১ বার ৫ গ্রাম Neem Super ১ লিটার জলে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করুন। এটি মাকড়সা, পোকামাকড়, এবং অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণীর প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করে।
    • Astha PROM (Phosphate Rich Organic Manure): প্রতিটি গাছের গোড়ায় ১৫-২০ দিন অন্তর ২৫-৫০ গ্রাম PROM সার প্রয়োগ করুন। এটি মাটিতে ফসফরাসের পরিমাণ বাড়িয়ে গাছের কান্ড বড় ও মজবুত করে।
    • Astha KMB (Potassium Mobilizing Bio Fertilizer): রোপণের ১৫-২০ দিন পরে প্রতিটি গাছের গোড়ায় ১০-২০ গ্রাম KMB প্রয়োগ করুন। এটি মাটির পটাশের অম্লতা কমায় এবং কান্ডের শক্তি বাড়ায়।
    • Astha AZO: প্রতি মাসে একবার ২-৫ গ্রাম AZO ১ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন। এটি মাটি থেকে অম্লতা দূর করতে সাহায্য করে এবং গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
  2. অর্গানিক এবং কেমিক্যাল মিশ্রণ পদ্ধতি:

    • প্রথম ৭-১০ দিনে প্রতি গাছের গোড়ায় ৫০-১০০ গ্রাম ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করুন।
    • ১০-১৫ দিন পর ৫ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫ গ্রাম পটাশ ১ লিটার জলে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিন।
    • ২০-৩০ দিন পর ১০ গ্রাম ফসফেট সার ২ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
    • মাসে একবার ৫০% অর্গানিক সার (যেমন গোবর বা ভার্মি কম্পোস্ট) এবং ৫০% কেমিক্যাল সার মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিন।
  3. সারকার্য এবং রসুনের চাষের জন্য কেমিক্যাল পদ্ধতি:

    • ৫ গ্রাম ইউরিয়া ১ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
    • ১০-১৫ দিন পর ১০ গ্রাম ডি.এ.পি. এবং ৫ গ্রাম পটাশ ১ লিটার জলে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করুন।
    • মাসে একবার সালফার স্প্রে করুন।

Astha ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহারের নির্দেশনা:

  • Astha Vermicompost: রোপণের পর প্রথম ৭ দিনে ৫০-১০০ গ্রাম ভার্মি কম্পোস্ট প্রয়োগ করুন এবং প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর পুনরায় প্রয়োগ করুন।
  • Astha Neem Super: সপ্তাহে ১ বার ৫ গ্রাম Neem Super ব্যবহার করুন।
  • Astha PROM: প্রতিটি গাছের গোড়ায় ১৫-২০ দিন অন্তর ২৫-৫০ গ্রাম PROM সার প্রয়োগ করুন।
  • Astha KMB: রোপণের ১৫-২০ দিন পরে ১০-২০ গ্রাম KMB প্রয়োগ করুন।
  • Astha AZO: প্রতি মাসে একবার ২-৫ গ্রাম AZO স্প্রে করুন।
  • Astha Killer (10000 PPM Neem Pesticide): রসুনে পোকামাকড় বা রোগ দেখা দিলে ১০-১৫ দিন পর একবার ৫-১০ মিলি Astha Killer ১ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
  • Astha Takshak (Chemical Pesticide): শুধুমাত্র যখন অত্যন্ত প্রয়োজন হয়, মাটি বা পাতায় স্প্রে করতে ৩-৫ গ্রাম Takshak ১ লিটার জলে মিশিয়ে প্রয়োগ করুন।

এই পদ্ধতির মাধ্যমে রসুনের চাষে সঠিক পরিচর্যা ও সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে গাছের কান্ড বড় এবং স্বাস্থ্যবান হবে।

Thursday, December 12, 2024

একনজরে দেখে নিন - Astha AZO (Azotobacter) Bio Fertilizer কোন কোন ফসলে ব্যবহার করা যাবে? পাউডার ফর্মে কোন ফসলে, কতটা পরিমানে এবং কি ভাবে ব্যবহার করতে হবে? লিকুইড ফর্মে কোন ফসলে, কতটা পরিমানে এবং কি ভাবে ব্যবহার করতে হবে? এটা ব্যবহার করলে কি উপকার হবে?

 

আস্থা এজো (অ্যাজোটোব্যাক্টার) বায়ো ফার্টিলাইজার: ব্যবহার ও উপকারিতা

আস্থা এজো হল একটি জৈব সার যা মূলত অ্যাজোটোব্যাক্টার নামক ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি। এই ব্যাকটেরিয়াটি বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে গাছের জন্য উপযোগী করে তোলে।

কী ধরনের ফসলে ব্যবহার করা যায়?

আস্থা এজো প্রায় সব ধরনের ফসলে ব্যবহার করা যায়। এটি বিশেষভাবে উপকারী:

খাদ্যশস্য:

  • ধান, গম, যব, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা প্রভৃতি।

ডাল শস্য:

  • ছোলা, মসুর, মটর, মুগ, সয়াবিন, মাস কলাই, কোশ প্রভৃতি।

তৈলবীজ:

  • বাদাম, সূর্যমুখী, সরষে, তিল, অর্জুন প্রভৃতি।

সব্জী :

  • টমেটো, আলু,পেঁয়াজ, বাঁধাকপি , ফুলকপি, বেগুন, লঙ্কা, কাকর, কুমড়া, পালং শাক, লেটুস, মূলা, গাজর, চুকন্দর, ধনেপাতা প্রভৃতি।

ফল:

  • আম, আপেল, কলা, লেবু-জাতীয় ফল (লেবু, কমলা, গ্রেপফ্রুট), আঙ্গুর, পেয়ারা, পেঁপে, ডালিম, তরমুজ প্রভৃতি।

নগদ ফসল:

  • কপাস (Cotton) , পাকি(বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল), আখ, তামাক প্রভৃতি।

অন্যান্য ফসল:

  • কফি, চা, রাবার, মসলা (লংকা , এলাচ, লবঙ্গ) প্রভৃতি।

পাউডার ফর্মে ব্যবহার

  • কত পরিমাণে: 
  • প্রতি হেক্টর জমিতে 2-3 কেজি পাউডার।
  • প্রতি বিঘাতে প্রায় 1 কেজি পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • টবে ব্যবহার

    টবের ক্ষেত্রে পরিমাণ নির্ধারণ করা কিছুটা জটিল, কারণ টবের আকার ও গভীরতা ভিন্ন হতে পারে। তবে, একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া যাক:

    • ছোট টব: 100-200 গ্রাম
    • মাঝারি টব: 200-300 গ্রাম
    • বড় টব: 300-500 গ্রাম

    কীভাবে পরিমাণ নির্ধারণ করবেন:

    1. টবের আকার ও গভীরতা পরিমাপ করুন: টবের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা পরিমাপ করে তার আয়তন বের করুন।
    2. মাটির পরিমাণ নির্ধারণ করুন: টবের আয়তন থেকে মাটির আয়তন বের করুন।
    3. প্রতি ঘনফুট মাটির জন্য পাউডারের পরিমাণ: সাধারণত প্রতি ঘনফুট মাটির জন্য 5-10 গ্রাম পাউডার ব্যবহার করা হয়।
    4. পরিমাণ নির্ধারণ: মাটির আয়তন এবং প্রতি ঘনফুট মাটির জন্য পাউডারের পরিমাণের ভিত্তিতে আপনি প্রয়োজনীয় পাউডারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবেন।

    উদাহরণ:

    • যদি আপনার একটি টবে 5 ঘনফুট মাটি থাকে এবং আপনি প্রতি ঘনফুট মাটির জন্য 8 গ্রাম পাউডার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনাকে 5 ঘনফুট x 8 গ্রাম/ঘনফুট = 40 গ্রাম পাউডার ব্যবহার করতে হবে।
  • কীভাবে:
    • বীজ চাষের আগে বীজকে পাউডারের সাথে মিশিয়ে চাষ করুন।
    • চারা রোপণের সময় গর্তে পাউডার ছিটিয়ে দিন।
    • জমিতে চাষের সময় পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে তারপর জমি চাষ করুন।

লিকুইড ফর্মে আস্থা এজো ব্যবহার: পরিমাণ নির্ধারণ

আপনি যখন লিকুইড ফর্মে আস্থা এজো ব্যবহার করবেন, তখন সাধারণত প্রতি লিটার জলে 5 মিলিলিটার লিকুইড মিশিয়ে স্প্রে করা হয়। তবে, বিঘা বা টবের ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের জন্য আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে।

বিঘাতে ব্যবহার

  • প্রতি বিঘাতে কত জলের প্রয়োজন: এটি নির্ভর করবে ফসলের ধরন, মাটির ধরন এবং আবহাওয়ার উপর।
  • স্প্রে করার পদ্ধতি: আপনি হাতে স্প্রে করবেন নাকি মেশিনের সাহায্যে, তার উপরও পরিমাণ নির্ভর করবে।

উদাহরণ:

  • ধরুন, আপনি একটি বিঘা জমিতে 200 লিটার জল স্প্রে করবেন।
  • প্রতি লিটার জলে 5 মিলিলিটার লিকুইড মিশাতে হবে।
  • সুতরাং, মোট 200 লিটার জলের জন্য 200 x 5 = 1000 মিলিলিটার বা 1 লিটার লিকুইড ফার্টিলাইজার প্রয়োজন হবে।

টবে ব্যবহার

  • টবের আকার: টবের আকারের উপর নির্ভর করে জলের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
  • গাছের ধরন: ছোট গাছের জন্য কম এবং বড় গাছের জন্য বেশি জল প্রয়োজন হতে পারে।

উদাহরণ:

  • ধরুন, আপনার একটি মাঝারি আকারের টবে একটি টমেটো গাছ আছে।
  • আপনি টবে প্রায় 2 লিটার জল স্প্রে করবেন।
  • সুতরাং, 2 লিটার জলের জন্য 2 x 5 = 10 মিলিলিটার লিকুইড ফার্টিলাইজার প্রয়োজন হবে।

মনে রাখবেন:

  • আবহাওয়া: গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বেশি এবং ঠান্ডা আবহাওয়ায় কম পরিমাণে স্প্রে করা যেতে পারে।
  • ফসলের পর্যায়: ফুল ফোটার সময় এবং ফল ধরার সময় বেশি পরিমাণে স্প্রে করা যেতে পারে।

সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করলে আস্থা এজো আপনার ফসলের উৎপাদন বাড়াতে এবং গাছের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে।

আস্থা এজো ব্যবহারের উপকারিতা

  • বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন স্থিরীকরণ: গাছের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান নাইট্রোজেনকে সরাসরি মাটিতে সরবরাহ করে।
  • গাছের বৃদ্ধি: গাছের বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
  • মূলের বৃদ্ধি: মূলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে পানি ও পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি: মাটিতে উপকারী সূক্ষ্মজীবাণুর সংখ্যা বাড়িয়ে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
  • পরিবেশবান্ধব: রাসায়নিক সারের তুলনায় পরিবেশবান্ধব।

মনে রাখবেন:

  • আস্থা এজো ব্যবহারের আগে পণ্যের উপর দেওয়া নির্দেশাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন।
  • বিভিন্ন ফসল এবং জমির ধরনের জন্য ব্যবহারের মাত্রা ভিন্ন হতে পারে।
  • সর্বোত্তম ফল পাওয়ার জন্য অন্যান্য জৈব সারের সাথে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়।

আপনার ফসলের জন্য সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়ার জন্য কোনো কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

আশা করি এই তথ্য আপনার জন্য উপকারী হবে।