উচ্চমানের চা উৎপাদন কি কেবল আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে? না! সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা করলেই পাওয়া যাবে সুগন্ধি ও উন্নতমানের চা পাতা। চলুন জেনে নিই চা গাছের যত্নের সঠিক কৌশল!
চা গাছের উৎপাদন বাড়াতে এবং গুণগত মান নিশ্চিত করতে সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে সার ও পুষ্টি উপাদান প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীচে মাসভিত্তিক নির্দেশিকা দেওয়া হলো:
মার্চ মাস (শুকনো মৌসুম)
চা গাছে নতুন পাতা গজানোর পরিমাণ কম থাকে, কারণ এটি শীতের পরে পুনরায় বৃদ্ধি শুরু করে। কুঁশির সংখ্যা বাড়াতে আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার প্রয়োগ করা আবশ্যক।
কেন প্রয়োগ করবেন?
নতুন কুঁশি দ্রুত গজানোর জন্য।
পাতার সংখ্যা ও আকার বৃদ্ধি করার জন্য।
গাছের গঠন মজবুত করতে।
প্রয়োগের পদ্ধতি:
ডোজ: ২০০ লিটার জলে ৬০০ মিলিলিটার (১ লিটার জলে ৩ মিলিলিটার) আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ইরিগেশন নিশ্চিত করা জরুরি—যদি পর্যাপ্ত জল সরবরাহ না থাকে, তবে স্প্রের কার্যকারিতা কমে যাবে। স্প্রিঙ্কলার বা পাইপ দিয়ে নিয়মিত জল দিতে হবে।
জুন-জুলাই মাস (বর্ষার মৌসুম)
বর্ষায় স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর নতুন পাতা জন্মায়। তবে, আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার প্রয়োগ করলে পাতা আরও মোটা ও শক্তিশালী হবে এবং গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।
কেন প্রয়োগ করবেন?
নতুন গজানো পাতার গুণগত মান উন্নত করতে।
পাতা মোটা এবং স্বাস্থ্যকর করতে।
অতিরিক্ত পাতা উৎপাদন নিশ্চিত করতে।
প্রয়োগের পদ্ধতি:
৭ থেকে ১০ দিন অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে।
অতিরিক্ত প্রয়োগ করলে পাতা অস্বাভাবিক বড় হয়ে যেতে পারে, যা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অক্টোবর-নভেম্বর মাস (উৎপাদন হ্রাসকাল)
এই সময় চা পাতা সংগ্রহ কমে যায়। তবে, আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার ও ম্যাগনেসিয়াম একসাথে স্প্রে করলে উৎপাদন কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।
কেন প্রয়োগ করবেন?
উৎপাদন হ্রাস রোধ করতে।
চায়ের পাতা সংগ্রহের সময় বাড়াতে।
গাছের পুষ্টি সরবরাহ ঠিক রাখতে।
প্রয়োগের পদ্ধতি:
গ্রোথ ব্লাস্টার ও ম্যাগনেসিয়াম মিশিয়ে স্প্রে করলে পাতার বৃদ্ধি স্বাভাবিক থাকবে।
নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস (শীতকাল)
শীতের ফলে পাতার সংখ্যা কমে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি মন্থর হয়ে যায়।
কেন প্রয়োগ করবেন?
গাছের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে।
নতুন কুঁশি সঠিকভাবে গঠিত করতে।
গাছের শক্তি পুনরুদ্ধার করতে।
প্রয়োগের পদ্ধতি:
আস্থা টি স্পেশাল প্রয়োগ করলে গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত হবে।
এটি আস্থা গ্রোথ ব্লাস্টার-এর বিকল্প নয়, বরং পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
পর্যাপ্ত জল সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার।
ডিপ প্রুনিং পরবর্তী পরিচর্যা (নভেম্বর-ডিসেম্বর)
ডিপ প্রুনিং করার পর আস্থা বায়ো এন.পি.কে. প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি গাছের পুনরুজ্জীবনে সাহায্য করে।
কেন প্রয়োগ করবেন?
গাছের বৃদ্ধির হার স্বাভাবিক রাখতে।
নতুন শাখা-প্রশাখার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে।
মাটির পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি করতে।
প্রয়োগের পদ্ধতি:
ডোজ: ১ লিটার জলে ৫ মিলিলিটার আস্থা বায়ো এন.পি.কে. মিশিয়ে স্প্রে বা স্প্রিঙ্কলারের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হবে।
কম্পোস্ট ব্যবহারের সময়: ৫০ কেজি আস্থা ভার্মি কম্পোস্ট-এর সাথে ১ লিটার আস্থা বায়ো এন.পি.কে. মিশিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে ২৪ ঘণ্টা রেখে তারপর গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন